Breaking

ইংরেজির প্রশ্নপত্র ফাঁস!

ইংরেজির প্রশ্নপত্র ফাঁস!


এ বছরের এসএসসি পরীক্ষার ইংরেজি প্রথম পত্রের প্রশ্নপত্রও ফাঁস হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে সোমবার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে স্থানীয় একটি কোচিং সেন্টারের দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাঁদের মোবাইলে থাকা প্রশ্নপত্রের সঙ্গে পরীক্ষার মূল প্রশ্নের মিল পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ওই কেন্দ্রের সচিব।

এসএসসির বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনার পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে ফাঁসকারীদের ধরিয়ে দিলে ৫ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল সরকার। এর পরদিনই মানিকগঞ্জে এমন ঘটনা ঘটল। পরীক্ষার আগমুহূর্তে মোবাইলকেন্দ্রিক তৎপরতা রাজধানীর বিভিন্ন কেন্দ্রে সরেজমিনেও দেখা গেছে।

অভিযোগ উঠেছে, এবার প্রশ্নপত্র ফাঁসের পাশাপাশি ভুল প্রশ্নপত্র বিতরণসহ কেন্দ্রে অব্যবস্থাপনাও হচ্ছে। অভিভাবকেরা বলছেন, এসব ঘটনায় তাঁদের সন্তানদের ওপর বাড়তি চাপ পড়ছে। এর মধ্যে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠা বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা বাতিল হবে কি না, তা নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়ছে।

এমন অবস্থায় সোমবার জাতীয় সংসদে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের পদত্যাগ দাবি করেছেন জাতীয় পার্টির সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ। না হয় তাঁকে বরখাস্ত করতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান তিনি।

মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে পরীক্ষার কেন্দ্রসচিব ও প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, কোচিং সেন্টারের দুই শিক্ষককে কেন্দ্রের সামনে ঘোরাঘুরি করতে দেখে তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়। পৌনে ১০টার দিকে তাঁদের পুলিশে ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় তাঁদের মোবাইলে প্রশ্নপত্র পাওয়া যায়। মোবাইলের প্রশ্নপত্রের সঙ্গে পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্র মিলে যায়। তাঁদের ফোনে ‘মাই এক্সাম’ নামে একটা লিংক পাওয়া গেছে।

মানিকগঞ্জে গ্রেপ্তার কোচিংয়ের দুজন শিক্ষক হলেন রুবেল হোসেন ও শরীফুল ইসলাম। তাঁরা উপজেলার বায়রা ইউনিয়নের চারাভাঙ্গা এলাকার ফ্রেন্ডস কোচিং সেন্টারের শিক্ষক। পুলিশ জানিয়েছে, পরীক্ষা শুরুর আগে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলা সদরের সিঙ্গাইর পাইলট উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে কোচিং সেন্টারের ওই দুই শিক্ষক ঘোরাঘুরি করতে থাকেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. যোবায়ের বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় আর কে কে জড়িত, বিষয়টি বের করার জন্য ওই দুই শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে পাবলিক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ইমাম হোসেন। কেন্দ্রসচিব আকরাম হোসেন মামলাটি করেন। গ্রেপ্তার দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
ফাঁস হওয়া ওই প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দেওয়াসহ অসদুপায় অবলম্বন করার অভিযোগে ওই কেন্দ্রের ১২ জন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়।

১ ফেব্রুয়ারি এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ৮টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডসহ ১০ বোর্ডে পরীক্ষার্থী ২০ লাখ ৩১ হাজার ৮৯৯। এবার শুরু থেকেই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আগেভাগে ঘোষণা দিয়ে পরীক্ষা শুরুর আগমুহূর্তে প্রশ্নপত্র ফাঁস করা হচ্ছে। বাংলা প্রথম পত্র ও দ্বিতীয় পত্রের বহুনির্বাচনী (এমসিকিউ) অংশের প্রশ্নপত্র পরীক্ষা শুরুর আগমুহূর্তে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা মূল প্রশ্নের সঙ্গে মিলে যায়। সোমবার এসএসসির ইংরেজি প্রথম পত্রের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পরীক্ষার আগমুহূর্তে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার অভিযোগ ওঠে। কিন্তু এত কিছুর পরও ফাঁসকারীদের ধরা যাচ্ছে না।

No comments:

Post a Comment