Breaking

দৈনন্দিন বিজ্ঞান অংশে ভাল করার কৌশল ২য় পর্ব


দৈনন্দিন বিজ্ঞান অংশে ভাল করার কৌশল ২য় পর্ব


দৈনন্দিন বিজ্ঞান- ২য় পর্ব
গত পর্বে আমরা বিজ্ঞান সম্পর্কে একটা সাধারণ আলোচনা করেছিলাম। পাশাপাশি কোন কোন অংশ থেকে প্রশ্ন হয় সেটাও দেখেছিলাম। এই পর্বে আমরা তাপ, শব্দ ও আলো এই তিনটি বিষয় নিয়ে একটু বিস্তৃতভাবে আলোচনা করব। বিগত বছরের প্রশ্ন বিশ্লেষণ করলে দেখতে পাবেন এই তিনটি অধ্যায় থেকেই প্রচুর পরিমাণ প্রশ্ন করা হয়।
তাপ নিয়ে প্রথমেই- তাপমাত্রার বিভিন্ন স্কেল সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। সেলসিয়াস, ফারেনহাইট, কেলভিন ইত্যাদি স্কেলের সাথে একটা গাণিতিক সম্পর্ক আছে। যেমন- C/5 = F-32/9 = k-273/5 এই একটি নিয়ম মনে রাখলেই আপনি কত ডিগ্রী সেলসিয়াসে কত ফারেনহাইট বা কত কেলভিন হয় সেটা মনে রাখতে পারবেন। এখানে C মানে সেলসিয়াস, F মানে ফারেনহাইট, K মানে কেলভিন। বিজ্ঞানের সাথে গণিতের একটা সম্পর্ক আছে। এই সম্পর্কগুলো একটু মনে রাখলেই এসব জিনিস আর আপনাকে মুখস্থ করে মাথায় চাপ ফেলতে হবে না। বরফ বা লোহা কত তাপমাত্রায় গলে এই ধরণের প্রশ্ন প্রায়ই আসে। এগুলো মনে রাখার জন্য সবগুলোকে একসাথে লিখে একটি চার্ট তৈরি করে পড়লে মনে রাখতে সুবিধা হবে। এখানে একটি বিষয় লক্ষ্য করবেন- গাইড বইতে প্রচুর জিনিসের গলনাঙ্ক, স্ফুটনাংক ইত্যাদি দেওয়া থাকে। আপনাকে কিন্তু এগুলো সব পড়তে হবে না। শুধুমাত্র হিরা, পানি, ইস্পাত বা লোহা এই ধরণের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও কমন বস্তুর থেকেই প্রশ্ন হয়। বিগত বছরের প্রশ্ন দেখলেই এই সম্পর্কে ভাল ধারণা পাবেন। বিভিন্ন বস্তুর প্রসারণ বা শক্তির অপচয় থেকেও প্রশ্ন হয়। এক্ষেত্রেও শুধু কমন কিছু বস্তু থেকেই প্রশ্ন করা হয়। মেঘলা দিনে তাপমাত্রা বেশি থাকে কিনা, কালো কাপড় নাকি সাদা কাপড় আগে শুকায় এই ধরনেরও কিছু প্রশ্নও দেওয়া হয়। এগুলো বাস্তবতার সাথে মিলিয় মনে রাখবেন। খেয়াল করলেই দেখবেন- সাদা জিনিস কালো জিনিসের থেকে বেশি আলো প্রতিফলন করে, ফলে এসব জিনিসের সাথে মিলিয়ে এমন প্রশ্নের উত্তর খুব সহজেই মনে রাখা যায়।

শব্দ থেকেও অনেক প্রশ্ন হয়ে থাকে। বিভিন্ন মাধ্যমে শব্দের বেগ মনে রাখার জন্য, গলনাঙ্ক মনে রাখার মত করেই একটা ছোট চার্ট করে ফেলুন। বিভিন্ন উদ্ভট প্রশ্ন দেখে ভয় পাবার কিছু নেই, এগুলো সাধারণত পরীক্ষায় দেওয়া হয় না। আরেকটি জিনিস খেয়াল রাখবেন- সবসময় প্রশ্নটা ভাল করে পড়ে উত্তর দেবেন। এবার প্রিলি পরীক্ষায় এসেছিল- শূন্য মাধ্যমে শব্দের বেগ কত। আমার পরিচিত অনেকেই চোখ বন্ধ করে ৩৩২ মি/সে দিয়ে এসেছে। এটা হলো বায়ু মাধ্যমে শব্দের বেগ। বাতাস ছাড়া, অর্থাৎ শূন্য মাধ্যমে শব্দ প্রবাহিত হতে পারে না। তাই শূন্য মাধ্যমে শব্দের বেগ হবে- শূন্য। এই কথাটি বলার কারণ হলো- কেউ যদি প্রশ্নটি ভাল মত খেয়ালও করে, কিন্তু তার যদি মূল বিষয়টি জানা না থাকে, তাহলে সে উত্তর করতে পারবে না। তাই বেশি জিনিস না পরে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস একটু ডিটেইল পড়তে হবে, আর পাশাপাশি উত্তর দেবার সময়ও প্রশ্ন লক্ষ্য করে উত্তর দিতে হবে। শব্দ কিভাবে তৈরি হয়, শব্দ কোন ধরণের তরঙ্গ, এসব বেসিক বিষয় সম্পর্কে ভাল ধারণা থাকলে এই অধ্যায়টি পড়তে সুবিধা হবে। তাই স্কুলের পাঠ্যবই থেকে এসব বিষয় শিখে নিতে হবে। এছাড়াও মানুষ, কুকুর, বাদুর এসব প্রাণীর শ্রাব্যতার সীমা গুলো একটা লিস্ট করে শিখে ফেলবেন।


আলো খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। আলোর বেগ, আলোর প্রতিফলন, প্রতিসরণ ইত্যাদি বেসিক বিষয় পাঠ্য বই থেকে শিখে নিতে হবে। বিভিন্ন ধরণের লেন্স ও তাদের কাজ, চোখের কার্যপ্রণালী, দৃষ্টিসীমা ইত্যাদি থেকে প্রশ্ন হয়। এগুলো একবার বুঝে পড়লেই দেখবেন মনে রাখতে পারছেন। আলোর বেগ, অপটিক্যাল ফাইবার আলোর বিভিন্ন রকম ব্যাবহার এগুলো শিখে নিতে হবে। কোন আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য কম-বেশি এগুলো মনে রাখার সুন্দর একটি উপায় আছে। “VIBGYOR” পদ্ধতির কথা তো সবারই মনে আছে? অথবা বেনিআসহকলাএর কথা? এখানে প্রথমে আছে বেগুনী। এটার তরঙ্গ দৈর্ঘ্য সবথেকে কম, আর শেষে আছে লাল। লাল আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য সবথেকে বেশি। ফলে এভাবে একটু কৌশল অবলম্বন করে প্রস্তুতি নিলে পরিশ্রম অনেক কমে যাবে। প্রস্তুতিও ভাল হবে।

No comments:

Post a Comment