Breaking

বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে ভাল ফলাফল করার কৌশল

বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে ভাল ফলাফল করার কৌশল


বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করার কৌশল (সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি)

পরীক্ষার সময় যত এগিয়ে আসে পরীক্ষার্থীদের টেনশনও তত বাড়তে থাকে। কিন্তু আপনাকে এই মানসিক চাপকে গুরুত্ব দিলে চলবে না। সঠিক ভাবে প্রস্তুতির জন্য চাই চাপহীন ফুরফুরে মন। তাই চাপ না নিয়ে শুধু সময়কে কাজে লাগাতে থাকুন। গত পর্বে আমরা বাংলা নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। এপর্বে আলোচনা করব সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জন্য চাই তথ্যভিত্তিক উপস্থাপনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পরীক্ষাতে সঠিক তথ্য সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারলে আপনি গণিতের মতই ভাল নম্বর তুলতে পারবেন। কিন্তু এজন্য উপস্থাপনার ভেতর অবশ্যই বিশেষত্ব থাকতে হবে। বিজ্ঞান মূলত তথ্য-উপাত্ত নিয়ে কাজ করে। তাই বিজ্ঞান বা প্রযুক্তি সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর হতে হবে প্রয়োজনীয় তথ্য সম্বলিত। পরীক্ষার খাতাতে এমনভাবে তথ্যগুলো উপস্থাপন করতে হবে যেন পরীক্ষক আপনার খাতা এক নজর দেখেই বুঝতে পারেন যে, আপনার খাতায় প্রয়োজনীয় তথ্য পর্যাপ্ত পরিমাণে দেওয়া হয়েছে। শুধু এই একটি কাজ করতে পারলেই আপনি অন্যদের থেকে অনেকখানি এগিয়ে থাকবেন। এজন্য- ১. উত্তরের শুরুতেই প্রশ্ন সম্পর্কিত কোন বিজ্ঞানীর নাম বা আবিষ্কারের তারিখ উল্লেখ করুন ২. রসায়নের প্রশ্নে প্রতি প্যারা শেষ হবার পর রাসায়নিক বিক্রিয়া দেবার চেষ্টা করবেন ৩. যদি বিক্রিয়া দেবার প্রয়োজন না থাকে তাহলে চিত্র বা ডায়াগ্রাম ব্যবহার করুন ৪. জীববিজ্ঞানের প্রশ্নে অবশ্যই চিত্র ব্যাবহার করতে হবে। ৫. যদি কোন জটিল চিত্র ব্যবহার করতে হয়, আর সেটা মনে রাখতে আপনার মাথায় চাপ পরে যায়, তাহলে চিত্রের ডিটেইল বাদ দিন। চিত্রের আউটলাইন ও মূল দু-একটি অংশ মনে রাখুন। কখনোই চিত্র একদম বাদ দেবার চিন্তা করবেন না। ৬. পদার্থবিজ্ঞানের প্রশ্নে গাণিতিক উপস্থাপনা করতে পারলে ভাল মার্ক পাবেন। না পারলে অবশ্যই প্রশ্ন সম্পর্কিত চিত্র উপস্থাপন করবেন। অর্থাৎ যেকোনোভাবে আপনাকে আপনার উত্তরটিকে তথ্যমূলক হিসেবে উপস্থাপন করতে হবে। ৭. পদার্থবিজ্ঞানের জন্য কিছু প্রয়োজনীয় চিহ্ন প্রয়োজন হয়। একটি চার্ট করে সেগুলো শিখে ফেলুন। খুব বেশি সময় লাগবে না। ৮. কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক প্রশ্নের মধ্যে অনেক টার্মিনোলজি থাকে। এগুলোর ব্র্যাকেটে ইংরেজি টার্মটি ব্যবহার করতে হবে। ৯. বর্ণনামূলক উত্তর না দিয়ে পয়েন্ট আকারে উত্তর দেবার চেষ্টা করুণ। ১০. পরীক্ষাতে খুব ছোট ও অল্প নম্বরের প্রশ্ন আসে। তাই একটি টপিকের শুধু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো মনে রাখুন।

বিজ্ঞানের ছাত্রদের কাছে উপরের পয়েন্টগুলো ব্যবহার করতে সমস্যা হবার কথা না। কিন্তু অন্যদের কাছে এগুলো বেশ ঝামেলার কাজ মনে হতে পারে। তবে দেখতে যেমনই লাগুক না কেন, আপনার রেগুলার পড়াশুনার পাশাপাশি অল্প কিছু বেশি সময় দিলেই আপনার উত্তরকে অন্যদের থেকে আলাদা করতে পারবেন। প্রস্তুতি তো আপনাকে নিতেই হবে। কিন্তু তার সাথে যদি একটু বেশি পরিশ্রম করেন, তাহলে আপনার খাতাটা দেখতে সবার থেকে আলাদা হবে। যতটা সম্ভব সংকেত, চিহ্ন, চিত্র এগুলো ব্যাবহার করতে হবে। যেক্ষেত্রে প্রয়োজন সেখানে রাসায়নিক বিক্রিয়া দেওয়া লাগবে। আপনি বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশুনা করেননি, তাই আপনি এটা পারবেন না এগুলো ভাবলে ভাল মার্ক পাওয়া যাবে না।

বিকল্প উত্তরের ভরসা করা ঠিক হবে না পরীক্ষাতে বিজ্ঞানের জন্য আপনি একটি, কম্পিউটারের জন্য দুইটি ও ইলেক্ট্রনিক্সের জন্য দুইটি অপশন হাতে পাবেন। পরীক্ষাতে কেউ যদি কোন বিশেষ অধ্যায়কে কঠিন মনে করে এড়িয়ে যেতে চান, তাহলে সাধারণ বিজ্ঞানের জন্য সেটা রিস্ক হয়ে যেতে পারে। কেননা এখানে একটি অপশনই থাকে। আর যেকোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে হলে কয়েকটি ক,,,ঘ আকারের ছোট প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। তাই বিকল্প অপশনের চিন্তা না করে সিলেবাসের টপিকগুলো কাভার করার চেষ্টা করতে হবে।

প্রথমেই বিগত বছরের প্রশ্ন বিশ্লেষণ করুণ প্রথমেই BPSC এর সিলেবাস ও বিগত বছরের প্রশ্নগুলো ভালমতো দেখে নিতে হবে। বিগত বছরের প্রশ্নের ধরণ দেখলে ঠিক কি ধরণের প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয় সে সম্পর্কে আপনার ভাল একটি ধারণা হয়ে যাবে। ফলে আপনি সিলেবাসের বিষয়বস্তুগুলো পড়ার সময় কোন বিষয়কে কতটুকু গুরুত্ব দেবেন সেটা বুঝতে পারবেন। প্রশ্নের ধরণ বুঝতে পারলে আপনি যে উৎস থেকেই পড়েন না কেন, আপনাকে বাড়তি তথ্য মাথায় রাখতে হবে না।

কোন বই থেকে শিখবেন? নবম-দশম শ্রেণীর বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বইতেই সিলেবাসের বেশিরভাগ টপিক খুঁজে পাবেন। আর কিছু টপিক পড়ার জন্য আপনাকে উচ্চ মাধ্যমিকের বইগুলোর সাহায্য নিতে হবে। যদি কিছু টপিক খুঁজে না পান, তাহলে প্রথমেই গুগলে সার্চ করবেন। এই সার্চ করাটাকে কখনোই বিরক্তির কাজ মনে করবেন না। কারণ এই সার্চের অভ্যাস আপনার স্টাডি করার ক্ষেত্রে প্রচুর সাহায্য করবে। কোন বিষয় সম্পর্কে আপ টু ডেট তথ্য উপস্থাপন করতে হলে আপনাকে অবশ্যই ইন্টারনেট সার্চের সাহায্য নিতে হবে। বাজারে অনেক রেফারেন্স ও গাইড বই পাওয়া যায়। এসব বই থেকে আপনি প্রশ্ন অনুশীলন করতে পারবেন। ভাল মার্ক পেতে চাইলে আপনাকে তথ্যভিত্তিক সুন্দর উপস্থাপনা করতে হবে। এজন্য আপনি কিছু ভাল ওয়েবসাইটের সাহায্য নিতে পারেন।

বইয়ের তালিকা ১. নবম-দশম শ্রেণীর রসায়ন ২. নবম-দশম শ্রেণীর পদার্থবিজ্ঞান ৩. নবম-দশম শ্রেণীর জীববিজ্ঞান ৪. নবম-দশম শ্রেণীর বিজ্ঞান ৫. উচ্চ-মাধ্যমিক শ্রেণীর রসায়ন ৬. উচ্চ-মাধ্যমিক শ্রেণীর পদার্থবিজ্ঞান ৮. নবম-দশম শ্রেণীর তথ্যপ্রযুক্তি বই ৯. উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণীর তথ্যপ্রযুক্তি বই ১০. ভাল একটি গাইড বই ওয়েবসাইটের তালিকা (এগুলো প্রয়োজন মনে হলে দেখতে পারেন)        
                          ১ revisionworld.com 
                           ২. studytime.co.nz
                           ৩. examstutor.com

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি আসলে কঠিন বিষয় নয় সামনেই পরীক্ষা, কঠিন কোন বিষয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছেন, এগুলো একবারের জন্য আমরা ভুলে যাব। একটু লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারবেন- আমাদের দৈনন্দিন জীবন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আমরা স্মার্টফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করি, ভিডিও কল করি, স্বয়ংক্রিয় মেশিনে টাকা লেনদেন করি, জটিল সব রোগের চিকিৎসা করই, এগুলো সবই সম্ভব হয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে। পরীক্ষায় কিন্তু জটিল কোন বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব থেকে প্রশ্ন করা হয়না। আমরা নবম-দশম শ্রেণিতে যেটুকু আবশ্যকীয় বিজ্ঞান শিখেছিলাম সেটাই মূলত প্রশ্ন করার ভিত্তি। বিজ্ঞান মুখস্থ করার চেষ্টা করবেন না।একটু বোঝার চেষ্টা করলেই দেখবেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত তথ্যগুলো মনে রাখতে পারবেন।

সাধারণ আলোচনা ও বিজ্ঞানের ব্যাবহার বিজ্ঞান কাজ মূলত পরীক্ষা নিরীক্ষার সাহায্যে সঠিক তথ্য জানা। বিজ্ঞানীরা একটি পরীক্ষা বার বার করে কোন একটা বিষয় সম্পর্কে জানতে পারেন । টমাস আলভা এডিসন লাইট বাল্ব আবিষ্কার করার জন্য ১০০০ বার পরীক্ষা করার পর বাল্ব জ্বালাতে সক্ষম হয়েছিলেন। পুরাতন পাঠ্য বইতে দেখবেন ফ্রান্সিস বেকনের একটি চার্ট দেওয়া আছে, যেখানে খুব সুন্দর করে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি দেখানো হয়েছে। আপনি সহজ কথায় প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলেই হবে। বই থেকে মুখস্থ লেখার কোন প্রয়োজন নেই। আর দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যাবহারের তো শেষ নেই। এগুলো পড়ার সময় দেখবেন আপনি নিজেই এগুলো সম্পর্কে অনেক কিছু জানেন। এই টপিক থেকে প্রশ্ন হলে- 1)বিভিন্ন ক্ষেত্র, যেমন- চিকিৎসা, কৃষি, শিক্ষা, শিল্প এগুলোর নাম পয়েন্ট আকারে দেবন 2)প্রতিটির সাথে অবশ্যই উদাহরণ দিতে হবে। 3)এসব প্রশ্নের উত্তর কখনোই বর্ণনা আকারে দিবেন না 4)চার্ট টাইপের জিনিস ব্যাবহার করতে পারেন ।

আলো, বিদ্যুৎ ও চুম্বকত্ব আলো খুবই ইন্টারেস্টিং একটি জিনিস। আরও মজার বিষয় হলো- আলোর সাথে বিদ্যুৎ ও চুম্বকের একটি সম্পর্ক রয়েছে। ১৮২০ সালে হেন্স ক্রিশ্চিয়ান ওরস্টেড নামে এক বিজ্ঞানী খেয়াল করলেন যে- ব্যাটারির সুইচ অন করার সময় পাশের কম্পাসের কাটাটা কেপে উঠছে। এ থেকেই তিনি প্রথম বুঝতে পারেন যে বিদ্যুতের সাথে চুম্বকের একটি সম্পর্ক রয়েছে। আপনি নিজেও বাসায় বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। ওরস্টেডের পর মাইকেল ফ্যারাডে নামে আরেক বিজ্ঞানী বিদ্যুৎ আর চুম্বক নিয়ে গবেষণা করে আবিষ্কার করেন- বিদ্যুৎ দিয়ে চুম্বকত্ব সৃষ্টি করা যায়। এবং তিনি আরও পরে চুম্বক দিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি উপায় বের করেন। এভাবেই পৃথিবীর প্রথম জেনারেটর আবিষ্কৃত হয়। তার আবিষ্কারটি কিন্তু জটিল কিছু না। তিনি চুম্বক নিয়ে কাজ করতে গিয়ে দেখলেন- একটি পরিবর্তনশীল চুম্বকের পাশে যদি কোন ধাতু থাকে তাহলে সেখানে একটি তার যুক্ত করলেই তার ভেতর দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়। এখানে মূল বিষয়টি হলো- বিদ্যুৎ আর চুম্বক মূলত একই শক্তিরই দুটি ভিন্ন রূপ। তাই বিদ্যুৎ প্রবাহিত করে চুম্বক তৈরি করা যায়, আবার চুম্বককে ঘুরালে বিদ্যুৎ তৈরি করা যায়। এভাবেই জেনারেটর কাজ করে। জেনারেটরে ভেতরে কয়েকটি চুম্বক থাকে। এগুলো একটি চাকার সাথে যুক্ত থাকে, আমরা যদি চাকাটিকে ঘুরাই তাহলে তারের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়। এর অনেক পরে ম্যাক্সওয়েল নামে একজন বিজ্ঞানী বিদ্যুৎ আর চুম্বকের জন্য একটি গাণিতিক সমীকরণ তৈরি করেন। বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয় যে এই দুটি মূলত একই শক্তি। দুটি মিলে নাম হয়ে যায় তড়িৎচুম্বক শক্তি। ম্যাক্সওয়েলের সমীকরণ থেকে দেখা যাচ্ছিল গতিশীল তড়িৎ ও চুম্বক থেকে এক ধরণের তরঙ্গ সৃষ্টি হয়। আর আলোই হল সেই তরঙ্গ। এই তড়িৎ চুম্বক তরঙ্গের আবার তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বেশি কম হতে পারে। তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বাড়লে কমলে এর আচরণও বদলে যায়। যেমন- আমরা যে আলোতে দেখি তার তরঙ্গ দৈর্ঘ্য- 4 x 10-7 মিটার - 4 x 10-7 মিটার। এর থেকে আরও কম তরঙ্গ দৈর্ঘ্যেরও তড়িৎচুম্বক তরঙ্গ হতে পারে। যেমন- এক্সরে, গামা রে, UV অর্থাৎ আল্ট্রাভায়োলেট, মাইক্রোওয়েভ। অর্থাৎ আমরা যে মাইক্রোওয়েভ দিয়ে খাবার গরম করি সেটাও ধরণের আলো! আবার এক্সরে ও এক ধরণের আলো। শুধু তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের পার্থক্যের কারণে এদের বৈশিষ্ট্য আলাদা। আর এই সবধরনের তড়িৎ-চুম্বক তরঙ্গকে একসাথে বলা হয় তড়িৎ-চুম্বক বর্ণালি। সিলেবাসে দেখবেন- আলোর প্রকৃতি, বিভিন্ন রঙ, তরঙ্গ দৈর্ঘ্য, চুম্বক, বিদ্যুতের সাথে চুম্বকের সম্পর্ক, তড়িৎ চুম্বক, UV- এই ধরণের টপিকগুলো আছে। এই বিষয়গুলো কিন্তু পাঠ্য বইতেই আছে। শুধু একটু বুঝে বুঝে পড়তে হবে। যারা বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র না তারা কিছু বৈজ্ঞানিক শব্দ বা “4 x 10^7 মিটারদেখেই এগুলো এড়িয়ে যাবেন না। একটু ভাল করে পাঠ্য বইগুলো পড়লেই বুঝতে পারবেন আমরা দৈনন্দিন জীবনে যেসব জিনিস ব্যবহার করি বিজ্ঞানের সাথে তার গভীর যোগাযোগ আছে। শুধুমাত্র বই থেকে বিভিন্ন তরঙ্গ দৈর্ঘ্য, UV-এক্সরে-লেজার এগুলোর ব্যাবহার, জেনারেটরের কাজ, হিটার, লাইট বাল্ব এগুলো সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো মনে রাখতে হবে। পাঠ্য বইতে দেখবেন তড়িৎ-চুম্বক বর্ণালির সুন্দর একটি চিত্র দেওয়া আছে। ঐ চিত্রটা একটু বুঝতে পারলেই অর্ধেক পড়া হয়ে যাবে। ১. প্রশ্নে চিত্র ব্যবহার করতে হলে অবশ্যই চিত্র ব্যবহার করবেন ২. বিভিন্ন পরিমাপের একক উল্লেখ করতে হবে ৩. প্রশ্নের শুরুতে পটভূমি ও বিজ্ঞানীর নাম ব্যবহার করতে পারেন শব্দ আলোর মত শব্দও এক ধরনের তরঙ্গ। কোন কিছুর কম্পনের ফলেই মূলত শব্দ সৃষ্টি হয়। উপরের আলোচনা থেকে নিশ্চয় বুঝতে পারছেন বিজ্ঞানে তরঙ্গের ধারণা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তরঙ্গও কোন জটিল বিষয় না। আমরা পুকুরে ঢিল ফেললে যে ঢেউ হয় সেটাও এক ধরণের তরঙ্গ। তবে তরঙ্গ শুধু এই এক ধরনেরই হয় না। পানির ঢেউ প্রবাহিত হয় পানির উপর দিয়ে, আর শব্দের তরঙ্গ প্রবাহিত হয় বাতাসের ভেতর দিয়ে। আর এই তরঙ্গ আমাদের কানে পৌঁছালে তাকে আমাদের মস্তিক্স শব্দ হিসেবে গ্রহণ করে। শব্দের অধ্যায় থেকে- ১. বিভিন্ন মাধ্যমে শব্দের বেগ, শ্রাব্যতার সীমা, ডেসিবল, কম্পাঙ্ক এই বিষয়গুলো দেখে রাখবেন। প্রশ্নের সাথে সম্পর্কিত হলে উপস্থাপন করতে হবে। ২. চিত্র দেওয়া লাগলে অবশ্যই চিত্র দিতে হবে, তাই সরল চিত্রগুলো দেখে রাখবেন ৩. উদাহরণ দেবার চেষ্টা করতে হবে।

এসিড, ক্ষার, লবণ ও পানি: এই টপিকগুলো শুরু করার আগে পাঠ্যবই থেকে অণু, পরমাণু ও আয়ন সম্পর্কে ভালমতো শিখে নিতে হবে। তাহলে অর্ধেক চাপ এখানেই শেষ হয়ে যাবে। সব পদার্থ পরমাণু দিয়ে তৈরি। এই পরমাণুর মধ্যে আবার থাকে- ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন। কোন পরমাণু থেকে ইলেকট্রন কম-বেশি হয়ে গেলে তাকে, “আয়নবলা হয়। এখন লক্ষ্য করুন- পানির মধ্যে যদি কোন জিনিস হাইড্রোজেন আয়ন ছাড়তে পারে- তবে সেটাকে আমরা এসিড বলি। আর এসিডের উল্টোটাই হলো ক্ষার। আর কোন দ্রবণে কতটুকু হাইড্রোজেন আয়ন আছে সেটাকেই বলে PHএই ধরণের বিষয়গুলো শিখে নিলে বাকি জিনিসগুলো মনে রাখতে অনেক সুবিধা হবে। এবার বই থেকে পানির গলনাংক, স্ফুটনাঙ্ক, কোনটার PH কত, পানি দূষণের কারণ-প্রভাব এই টাইপের বিষয়গুলো পয়েন্ট আকারে শিখে নিবেন। তাহলে মনে রাখতে সুবিধা হবে। ১. এই অধ্যায়গুলো থেকে প্রশ্ন হলে রাসায়নিক বিক্রিয়া ব্যবহার করবেন ২. প্রশ্নের বর্ণনা বাড়াবেন না। ছোট কিন্তু তথ্যমূলক লেখা উপস্থাপন করবেন ৩. প্রয়োজনীয় উদাহরণ দিতে হবে ।

প্রাকৃতিক সম্পদ, পলিমার, বায়ুমণ্ডল, খাদ্য ও পুষ্টি: এই টপিকগুলো নিয়ে লেখার সময় যতটা সম্ভব উদাহরণ দেবার চেষ্টা করতে হবে। পাশাপাশি প্রয়োজন হলে চিত্র ব্যাবহার করতে হবে। খাদ্য ও পুষ্টি অংশটুকু নবম-দশম শ্রেণীর বিজ্ঞান বই থেকে শিখতে পারেন। ভিটামিন বা আমিষের অভাবে কি কি রোগ হয়, কোন খাদ্যে কোন উপাদানের পরিমাণ কতটুকু, দৈনিক কি পরিমাণ ফল খাওয়া উচিত- প্রয়োজন অনুসারে এই তথ্যগুলো উপস্থাপন করতে হবে। বায়ুমণ্ডল অধ্যায়টি নবম-দশম শ্রেণীর ভূগোল বইতে পেয়ে যাবেন। বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরের নাম, উচ্চতা, উপাদান, কোন স্তরের ভূমিকা এই তথ্যগুলো দিয়ে উত্তর করলে অবশ্যই ভাল মার্ক পাওয়া যাবে।

বায়োটেকনোলজি , রোগ ও স্বাস্থ্যসুরক্ষাঃ বায়োটেকনোলজি অংশটা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের বিজ্ঞান বই মিলিয়ে পড়লে ডিটেইল পাবেন। এর মধ্যে বেশিরভাগ টপিকই বংশগতি বিজ্ঞান নিয়ে। 1)DNA, RNA বা ক্রোমসোম বিষয়ে কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই চিত্র ও রাসায়নিক সংকেতসহ দিতে হবে 2)উত্তরের শুরুর অংশে DNA-এর আবিষ্কারক, কত সালে আবিষ্কার করা হয় এই ধরণের তথ্যভিত্তিক জিনিস দিয়ে শুরু করবেন। 3)DNA, RNA ভাইরাসগুলোর নাম, কোন ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার কারণে কোন রোগ হয় এগুলো উদাহরণ সহ দিতে হবে। 4)কোন কোন কাজে ন্যানোটেকনোলজির ব্যাবহার রয়েছে এগুলো পয়েন্ট আকারে দিতে হবে 5)অবশ্যই উদাহরণ দিত হবে ।

কম্পিউটার প্রযুক্তি: আমরা প্রতিনিয়তই বিভিন্ন কাজে কম্পিউটার প্রযুক্তির ব্যাবহার করছি। নতুন সিলেবাসে দেখবেন কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশ যেমন- মাইক্রোপ্রসেসর, বায়োসের কাজ, কম্পাইলার, সিস্টেম সফটওয়্যার, অপারেটিং সিস্টেম, কম্পিউটার ভাইরাস, অফিস অটোমেশন, সফটওয়্যার তৈরি এসব বিষয় রয়েছে। এগুলো আমাদের ব্যাবহারিক জীবনের সাথে সম্পর্কিত। এই টপিকগুলো মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি বই থেকে শিখবেন। 1)বিভিন্ন অংশের কাজ পয়েন্ট আকারে দিতে হবে 2)প্রয়োজন হলে চিত্র ব্যাবহার করবেন।

তথ্য প্রযুক্তি: বর্তমান সময়কে বলা হয় তথ্য প্রযুক্তির যুগ। ডাটা কমিউনিকেশন, ডাটাবেজ সফটওয়্যার, LAN, MAN,WAN নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি বইতে সুন্দর করে লিখা আছে। ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারের দায়িত্ব, ফেসবুক-টুইটারের মত সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম, ব্লগের মত টপিকগুলোকে মজা নিয়ে শিখবেন। আর তার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য চার্ট করে ফেলবেন। তাহলে মনে রাখতে সুবিধা হবে। বিস্তারিত নোট করে সময় নষ্ট করবেন না। প্রয়োজন হলে কোন বিষয়টি কোন বইয়ের কত পৃষ্ঠায় রয়েছে এগুলোর একটা লিস্ট তৈরি করে ফেলবেন।

ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেক্ট্রনিকস প্রযুক্তি: এই অংশটা একটু বিস্তারিত। তবে একটু পরিকল্পনা করে পড়লে সময়ের মধ্যেই শেষ করতে পারবেন। ওহমের সূত্র, কার্শফের ভোল্টেজ সূত্র, কার্শফের তড়িৎ প্রবাহের সূত্র, এই সূত্রগুলো একসাথে লিখে ফেলবেন। ইলেকট্রনিক ডিভাইস, অসিলেটর, রোধ, ক্যাপাসিটর, আইসি, সেমিকন্ডাক্টর, টেলিভিশন, রাডার এই ধরণের জিনিসগুলোর সাথে একটির অন্যটির সম্পর্ক রয়েছে। এগুলোর একসাথে পড়বেন। 1)ক্যাপাসিটর, আইসি, সেমিকন্ডাক্টর কাজ, গুরুত্ব ইত্যাদি পয়েন্ট আকারে দিতে চেষ্টা করবেন। 2)প্রশ্নের উত্তরগুলো সাজিয়ে লিখবেন যেন প্রতিটি তথ্য চোখে পরে সময় ও নম্বর অনুযায়ী বিভিন্ন টপিক ভাগ করে ফেলুন। পরীক্ষার আগে কোনভাবেই অন্যকিছুতে মনোযোগ না দিয়ে শুধু লেখার অনুশীলন করে যান। যে তথ্যগুলো মনে রাখতে সমস্যা হয় সেগুলো বার বার পড়ুন। নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন। সফলতা আসবেই।

No comments:

Post a Comment